-->
দেশের রাজস্ব নীতিতে নাক গলানো উচিত নয় সুপ্রিম কোর্টের, এর থেকে বেশি ছাড় দেওয়া অসম্ভব: কেন্দ্র

দেশের রাজস্ব নীতিতে নাক গলানো উচিত নয় সুপ্রিম কোর্টের, এর থেকে বেশি ছাড় দেওয়া অসম্ভব: কেন্দ্র

 



বঙ্গ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:-গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে মোদী সরকার জানিয়ে ছিল, করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের কারণে ২ কোটি পর্যন্ত ঋণের জন্য মোরাটোরিয়ামের মেয়াদে ইএমআই-এর উপর যে সুদ বকেয়া হয়েছে তা গ্রাহককে দিতে হবে না। সরকার সেই খরচ বহন করবে। যদিও সরকারের এই সিদ্ধান্ত ‘আশাব্যঞ্জক নয়’ বলেই জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। দেশের শীর্ষ আদালতের এই বক্তব্যের পরে এবার কেন্দ্র পষ্টাপষ্টি জানিয়ে দিল ‘বিভিন্ন সেক্টরে এর থেকে বেশি ছাড় দেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’ কেন্দ্রের তরফে আরও জানানো হল, দেশের রাজস্ব নীতিতে নাক গলানো উচিত নয় সুপ্রিম কোর্টের।

কেন্দ্রের তরফে একটি হলফনামা দিয়ে এই কথা জানানো হয়েছে। কেন্দ্র জানিয়েছে, “রাজস্ব নীতি নির্ধারণ করা কেন্দ্রের দায়িত্ব। কোনও আদালতের উচিত নয় কোন ক্ষেত্রকে কী ছাড় দেওয়া হবে সেই বিষয়ে নাক গলানো। ২ কোটি পর্যন্ত ঋণের জন্য মোরাটোরিয়ামের মেয়াদে ইএমআই-এর উপর যে সুদ বকেয়া হয়েছে তাতে ছাড় দেওয়া ছাড়া এই মুহূর্তে আর ছাড় দেওয়া সম্ভব নয়। নইলে তা দেশের জাতীয় অর্থনীতি ও ব্যাঙ্কিং পরিষেবার উপর প্রভাব ফেলবে।”

গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানানো হয়, সুদের উপর ছাড় নিয়ে কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আশাব্যঞ্জক নয়। তাই এই বিষয়ে কেন্দ্রকে আরও ভাবনা চিন্তা করার পরামর্শ দেয় শীর্ষ আদালত। ব্যাঙ্কগুলির অবস্থানের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা হয়েছিল সেগুলির শুনানির ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট বলে, “কেন্দ্র আবেদনকারীদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করতে ব্যর্থ হয়েছে।”

শুধু তাই নয়, রিয়েল এস্টেট ও পাওয়ার ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের সমস্যা নিয়ে কেন্দ্র কী ভাবছে ও তাদের ছাড়ের বিষয়ে নতুন করে হলফনামা জমা দেওয়ার কথা বলে সুপ্রিম কোর্ট। তারই জবাবে কেন্দ্র জানিয়েছে, “এভাবে পিটিশন দায়ের করে আলাদা আলাদা সেক্টরের জন্য ছাড়ের দাবি করা যায় না। এর থেকে বেশি ছাড় দেওয়া সম্ভব নয়।”

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দেশে তীব্র অর্থনৈতিক সংকট শুরু হওয়ায় নির্দিষ্ট মেয়াদের ঋণের উপর মোরাটোরিয়াম ঘোষণা করেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। তাতে বলা হয়েছিল, কোনও গ্রাহক চাইলে তিন মাস ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা স্থগিত রাখতে পারেন। পরে মোরাটোরিয়ামের মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়ানো হয়। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি গ্রাহকদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল, কিস্তির টাকা দেওয়া বন্ধ করলে বকেয়া আসল ও সুদ উভয়ের উপরেই ওই মেয়াদের জন্য সুদ দিতে হবে।

ব্যাঙ্কগুলির এই অবস্থানের বিরোধিতা করে মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। এ ব্যাপারে গত ২৮ সেপ্টেম্বর সরকারের চূড়ান্ত ব্যাখ্যা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সে দিন কেন্দ্রীয় সরকারকে এ জন্য আরও সাতদিন সময় দেয়। বিচারপতিরা বলেন, কোভিডের বাজারে গ্রাহক তথা ঋণ গ্রহীতাদের সুরাহা দেওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে সাত দিনের মধ্যে পরিকল্পনা পেশ করতে হবে মোদী সরকারকে।

তারপরেই মোদী সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে পেশ করা হলফনামায় বলা হয়েছে, বর্তমান মহামারীর সময়ে এ ব্যাপারে সুরাহার রাস্তা একটাই। তা হল, সরকার যদি সেই খরচ বহন করে তা হলেই একমাত্র সব দিকে বাঁচে। কারণ, সুদের উপর যে সুদ জমা হয়েছে তার সামগ্রিক পরিমাণ হল ৬ লক্ষ কোটি টাকা। ব্যাঙ্কগুলিকে সেই খরচ বহন করতে বললে তাদের নেট ওয়ার্থের একটা বড় অংশ চলে যাবে। অর্থাৎ ব্যাঙ্কগুলি বিপন্ন হয়ে পড়বে। তাতে আবার ঘুরিয়ে সাধারণ মানুষেরই ক্ষতি। তাই ২ কোটি টাকা পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট মেয়াদের ঋণের বকেয়া সুদের উপর সুদের টাকা সরকারই দেবে। কিন্তু কেন্দ্রের সেই বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়নি সুপ্রিম কোর্ট।

১৩ অক্টোবর অর্থাৎ আগামী মঙ্গলবার ফের এই মামলার শুনানি। এখন দেখার কেন্দ্রের এই মন্তব্যের পরে সুপ্রিম কোর্টের তরফে কী বলা হয়।

0 Response to "দেশের রাজস্ব নীতিতে নাক গলানো উচিত নয় সুপ্রিম কোর্টের, এর থেকে বেশি ছাড় দেওয়া অসম্ভব: কেন্দ্র"

Post a Comment

Article Top Ads

Central Ads Article 1

Middle Ads Article 2

Article Bottom Ads