নবান্নকে না জানিয়ে কেন এনআইএ তল্লাশি মুর্শিদাবাদে, গোয়েন্দা কর্তার কাছে কৈফিয়ত চাইলেন ডিজি
বঙ্গ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:-শনিবার ভোরে কাক ডাকার আগেই মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে আল কায়দা জঙ্গি সন্দেহে ৬ জন যুবককে গ্রেফতার করেছে জাতীয় তদন্ত এজেন্সি তথা এনআইএ। একই ভাবে কেরল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে আরও ৩ জনকে। যে ৩ জনেরও বাড়ি মুর্শিদাবাদে। সপ্তাহান্তে তাই নিয়েই হইচই পড়ে গিয়েছে বাংলায়।
কিন্তু সূত্রের খবর, এনআইএ-র ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ নবান্ন। রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে কেন মুর্শিদাবাদে তল্লাশি চালানো হল তা নিয়েই মূলত ক্ষোভ নবান্নের। তাৎপর্যপূর্ণ হল, নবান্ন তো পরের কথা মুর্শিদাবাদের জেলা পুলিশ সুপারও নাকি তল্লাশির প্রাক মুহূর্ত পর্যন্ত ব্যাপারটার টের পাননি। ধরপাকড় শেষ হয়ে যাওয়ার পর এনআইএ-র অফিসাররা রাজ্য পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছে। সূত্রের মতে, এ ঘটনায় নবান্ন এতই চটেছে যে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কর্তার কাছে এর ব্যাখ্যা চেয়েছে।
মুর্শিদাবাদে এনআইএ-র তল্লাশির ঘটনায় শাসক দলের একাংশ নেতাও বিব্রত। তাঁরা মনে করছেন, এই ঘটনাকে সামনে রেখে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের চেষ্টা তীব্র করে তুলতে পারেন অমিত শাহরা। সেই প্রেক্ষাপট রচনা করার জন্যই রাজ্য সরকারকে এড়িয়ে এ সব ধরপাকড় করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক মুখপাত্র এদিন দ্য ওয়ালকে বলেন, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ রুখে দেওয়া তথা জাতীয় নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব রয়েছে এনআইএ-র উপর। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা রাজ্যের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়লেও এ ধরনের তল্লাশির ক্ষেত্রে এনআইএ রাজ্য পুলিশকে আগাম জানাতে বাধ্য নয়। বরং এজেন্সি চেষ্টা করে সব রকমের গোপনীয়তা বজায় রাখতে।
পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, রাজ্য সরকারকে এ ধরনের তল্লাশির কথা জানাতে যেমন এনআইএ বাধ্য নয়, তেমনই এও ঘটনা যে আস্থার সম্পর্ক থাকলে আগাম জানিয়েও তল্লাশি চালানো যায়। তাই এই ঘটনাক্রম থেকে এও মনে করা যেতে পারে যে, কেন্দ্র-রাজ্য আস্থার সম্পর্কে ঘাটতি রয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, “কেন এনআইএ রাজ্য সরকারকে বা পুলিশ আগাম জানায়নি সেটা তারাই বলতে পারবে। আমি এটুকুই বলতে পারি যে, এই ঘটনা রাজ্য পুলিশের ব্যর্থতাও প্রমাণ করে। মুর্শিদাবাদে বসে জঙ্গি কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছিল ওরা। রাজ্য পুলিশেরই তো আগে তা জানা উচিত ছিল। তাদের কাছে কি কোনও গোয়েন্দা তথ্যই থাকে না? ” অধীরবাবুর কথায়, “মুর্শিদাবাদ থেকে এর আগেও জঙ্গি ধরা পড়েছে। তা ছাড়া এই বাংলাতেই খাগড়াগড়ে দেখা গিয়েছে জঙ্গিরা ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে। বিস্ফোরণ না ঘটলে পুলিশ জানতেও পারেনি সেখানে জঙ্গিরা ছিল। কদিন আগে আবার দেখা গেল, বাংলাদেশের মোস্ট ওয়ান্টেড অপরাধী, এমনকি জলদস্যুও বাংলায় ধরা পড়েছে। রাজ্যে যে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি ভাল নেই, তা কি এর থেকে স্পষ্ট হচ্ছে না!”
0 Response to "নবান্নকে না জানিয়ে কেন এনআইএ তল্লাশি মুর্শিদাবাদে, গোয়েন্দা কর্তার কাছে কৈফিয়ত চাইলেন ডিজি"
Post a Comment