‘দাদাগিরি’ চালাচ্ছে আমেরিকা, ট্রাম্পের টিকটক, উইচ্যাট নিষিদ্ধ ঘোষণার পরে হুঁশিয়ারি চিনের
বঙ্গ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:-ভারতের পর এবার আমেরিকাতেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে চিনা অ্যাপ টিকটক ও উইচ্যাট। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই নির্দেশে বেজায় চটেছে চিন। তাদের দাবি, দাদাগিরি চালাচ্ছে আমেরিকা। কোনও নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকা, এমনটাই দাবি চিনের। এমনকি ট্রাম্প সরকারকে হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছে চিন।
চিনের বাণিজ্যমন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, “চিন আমেরিকার কাছে আর্জি জানাচ্ছে, দাদাগিরি থেকে সরে আসুন। আন্তর্জাতিক নিয়ম ও নির্দেশিকা সুষ্ঠুভাবে পালন করুন।” শুধু তাই নয়, আমেরিকার এই কাজের জন্য রীতিমতো হুঁশিয়ারিও দিয়েছে চিন। এই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “যদি আমেরিকা এভাবেই চলতে থাকে তাহলে চিনা কোম্পানিদের অধিকার ও স্বার্থরক্ষার জন্য যা করণীয় তা করবে চিন।”
চিনা অ্যাপ টিকটক আগেই নিষিদ্ধ হয়েছিল ভারতে। সেই পথে হেঁটে টিকটক সহ আরও কয়েকটি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করার কথা ভেবেছিল আমেরিকাও। তবে সম্প্রতি টিকটক নির্মাতা সংস্থা বাইটড্যান্সের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে মার্কিন টেক জায়ান্ট ওরাকলের কাছে এই অ্যাপের মালিকানা চলে যাবে কিনা সে নিয়ে বিস্তর টানাপড়েন চলছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য বলেছিলেন, আমেরিকায় টিকটক থাকুক এটা তিনি পছন্দ করছেন না। দরকার হলে বিশেষ ব্যবস্থা নিতেও পিছপা হবেন না।
শুক্রবার ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়ে দেয়, রবিবার থেকে চিনা ভিডিও অ্যাপ টিকটক আর ডাউনলোড করতে পারবেন না মার্কিন বাসিন্দারা। অন্যদিকে মেসেজিং অ্যাপ উইচ্যাট পুরোপুরি নিষিদ্ধ করছে আমেরিকা। হোয়াইট হাউসের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, দেশের জাতীয় নিরাপত্তায় হস্তক্ষেপ করছে টিকটক ও উইচ্যাট। তথ্য চুরির চেষ্টাও করেছে এই দুই চিনা অ্যাপ। তাই দেশের জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে এই দুই অ্যাপ বন্ধ করে দেওয়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকা।
আমেরিকার সঙ্গে চিনের বাণিজ্য যুদ্ধ, করোনা পরিস্থিতি ও হংকং নিয়ে বেজিংয়ের সাম্প্রতিক পদক্ষেপে দু’দেশের সম্পর্ক ফের তিক্ত হয়ে উঠেছে। এই আবহেই বেশ কয়েকটি চিনা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ আমেরিকায় নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, টিকটকের মতো ভিডিও অ্যাপের সাহায্য নিয়ে আমেরিকার উপর নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে বেজিং। মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি ও অর্থনীতির উপরেও নজর রাখছে টিকটক। ব্যবহারকারীদের লোকেশন ডেটা, ব্রাউজিং ও সার্চ হিস্ট্রি সহ যা যা জেনে ফেলা সম্ভব, টিকটক ইতিমধ্যেই আমেরিকায় থাকা ব্যবহারকারীদের সেই সব তথ্য জেনে নিয়েছে। ব্যক্তিগত ও গোপন নথি তারা চিনের কমিউনিস্ট পার্টির হাতেও তুলে দিয়েছে। এমনকি আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকেও প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে বলেও দাবি করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
নজরদারির অভিযোগ এবং আমেরিকায় টিকটক নিষিদ্ধ করা নিয়ে তীব্র আপত্তি তুলেছেন বাইটড্যান্সের সিইও কেভিন মায়ের। তাঁর বক্তব্য, এমন হঠকারি সিদ্ধান্তের ঘোর বিরোধিতা করা হচ্ছে। টিকটক চ্যালেঞ্জ করতে পারে যে এই অ্যাপ কখনওই ব্যক্তিগত তথ্যে নজরদারি করেনি। কেভিনের দাবি, টিকটক কোনও রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন নেয় না বা রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডাও নেই এই অ্যাপের। সকলকে আনন্দ দেওয়ার জন্যই এই অ্যাপ। টিকটক যে সমাজের শত্রু নয় সেটা বুঝতে হবে আমেরিকাকে। আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে এবার হুঁশিয়ারি দিল চিনও।
0 Response to "‘দাদাগিরি’ চালাচ্ছে আমেরিকা, ট্রাম্পের টিকটক, উইচ্যাট নিষিদ্ধ ঘোষণার পরে হুঁশিয়ারি চিনের"
Post a Comment