-->
চিন সীমান্তে দরকার হলে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিল সেনাবাহিনী | বঙ্গ প্রতিদিন

চিন সীমান্তে দরকার হলে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিল সেনাবাহিনী | বঙ্গ প্রতিদিন




বঙ্গ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:-চিন-ভারত সীমান্তের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অর্থাৎ লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কনট্রোলে অস্ত্র ব্যবহারের নীতিতে বদল আনল ভারতীয় সেনা। বদলে ফেলল এক দশকের বেশি সময়ের পুরনো চুক্তি। আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার না করার নিয়ম বদলে, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে সেনাদের আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগেই বলেছিলেন, পরিস্থিতি বুঝে পদক্ষেপ করার পূর্ণ অধিকার রয়েছে ভারতীয় সেনাদের। এবার তা অফিসিয়ালি ঘোষিত হল।
বস্তুত, এমনটা যে হতে পারে, তা আগেই আন্দাজ করেছিলেন পর্যবেক্ষকদের একাংশ। সরকারের শীর্ষ সূত্রের খবর ছিল, চিনা সেনাবাহিনী উগ্রতা দেখালে কিংবা চোখ রাঙালেই ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনী আর হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। উপযুক্ত জবাব দেবে। সে ব্যাপারে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যেই পূর্ব লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেই বৈঠকেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় চিনা আগ্রাসন রুখতে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ‘ফ্রি হ্যান্ড’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর মিলেছিল। এবার সেটাই সত্যি হল।
লাদাখ সংঘাত নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কয়েকদিন আগে বেজিংয়ের উদ্দেশে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে বলেছিলেন, ভারত শান্তি চায়। কিন্তু কেউ যদি মনে করে যে উস্কানি দেবে তাহলে ভারত তার উপযুক্ত জবাব দিতে জানে। অনেকের মতে, সেই মেজাজকে সেনাবাহিনীর মধ্যে তরান্বিত করতেই সীমান্তে দেশ রক্ষার সৈনিকদের পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।
সীমান্তে যে ভারত তার পাল্টা সামরিক প্রস্তুতি শুরু করেছে তা গতকাল শনিবারই টের পাওয়া গিয়েছে। চিনের দিকে যুদ্ধবিমান ওড়ার পর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতের আকাশেও বায়ুসেনা বিমানের মহড়া দিয়েছে।
বস্তুত, ১৯৯৬ এবং ২০০৫ সালে হওয়া দুই দেশের চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশই সীমান্তে পরস্পরের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে না৷ ওই চুক্তি অনুযায়ী, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার দু’ কিলোমিটারের মধ্যে দুই দেশই কোনও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করবে না অথবা বিস্ফোরণ ঘটাবে না৷ সেই কারণে গত সোমবারও নিরস্ত্র অবস্থাতেই ভারতীয় সেনা জওয়ানরা ছিল। আর সেই সময়েই খালি হাতে থাকা ভারতীয় সেনাদের ওপর নির্মম  অত্যাচার চালায় চিনা সেনা। লোহার রড, লাঠি, পাথর দিয়ে পিটিয়ে মারা হয় ২০ জন সেনাকে।
এই ঘটনা সামনে আসার পরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল কেন ভারতীয় জওয়ানরা নিরস্ত্র অবস্থায় শত্রুদের সামনে গিয়ে পৌঁছেছিল! এই প্রশ্নের জেরেই বেশ কিছু পরিবর্তন আনার কথা শুরু হয় ভারতীয় সেনাবাহিনীর অন্দরে। বার থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হলে ফিল্ড কমান্ডারকে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে । আর এই সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়েই বদলে যেতে চলছে দশক পুরনো চুক্তি।
শুধু তাই নয়, সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআই-এর খবর অনুযায়ী, এবার থেকে বিশেষ আর্থিক ক্ষমতাও মিলবে ভারতীয় সেনার। এর ফলে ৫০০ কোটি টাকা পর্যন্ত প্রয়োজনীয় অস্ত্র এবং সরঞ্জাম কিনতে পারবে তিন বাহিনীই৷ চীনের সঙ্গে সংঘাত যদি আরো বড় আকার ধারণ করে, সেকথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবক়র৷
পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর চিনা আগ্রাসন এবং বিপুল সংখ্যায় বাহিনী মোতায়েন করার পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার৷ প্রসঙ্গত, উরি হামলা এবং বালাকোটে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পরেও দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে একই ধরনের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

0 Response to "চিন সীমান্তে দরকার হলে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিল সেনাবাহিনী | বঙ্গ প্রতিদিন"

Post a Comment

Article Top Ads

Central Ads Article 1

Middle Ads Article 2

Article Bottom Ads