-->
মেডিকেল কলেজে হইহই কাণ্ড! করোনা রোগী ন’তলার পাঁচিলে বসে পা দোলাচ্ছেন! | বঙ্গ প্রতিদিন

মেডিকেল কলেজে হইহই কাণ্ড! করোনা রোগী ন’তলার পাঁচিলে বসে পা দোলাচ্ছেন! | বঙ্গ প্রতিদিন




বঙ্গ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:-জ্বর, সর্দি-কাশির উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসার পরে কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট আসে তাঁর। তাঁকে রাখা হয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে। রোগীর বয়স কম। মাত্র ৩৪ বছর। চিকিৎসকরাও ভেবেছিলেন, তাঁর অন্য আর কোনও ব্যাধি না থাকায় দ্রুত সুস্থ করে বাড়ি ফেরানো যাবে। কিন্তু সে সব তো পরের কথা! গোটা হাসপাতালকেই ব্যতিব্যস্ত করে তুলেছেন ওই রোগী। বলতে গেলে, গোটা কোভিড ওয়ার্ডের একাই ঘুম কেড়ে নিয়েছেন তিনি।

কেন?

গোটা সুপার স্পেশ্যালিটি বিল্ডিংয়ের অর্থাৎ করোনা চিকিৎসার অংশে যেখানে সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। ভেন্টিলেশন থেকে আইসোলেশন, শুনছেন না কারও কথা। নিজের এবং কখনও কখনও পাশের বেডের রোগীরও লেপ-কম্বল গায়ে চাপিয়ে একটা কম্বল মুড়ি দিয়ে কখনও বেডের তলায় লুকিয়ে পড়ছেন। কখনও বা ঘাপটি মেরে থাকছেন সিঁড়ির নিচে, কিংবা হাসপাতালের কোনও আলমারির ফাঁকে। কখনও আবার হাসপাতালের পিছনের উঠোনে চলে যাচ্ছেন। রবিবার আরও ভয়াণক কাণ্ড বাধিয়ে বসেন। দুপুরে দেখা যায়, তিনি ওয়ার্ডে নেই। খোঁজ খোঁজ। তন্ন তন্ন করে খুঁজে শেষমেশ দেখা যায়, ৯ তলা ছাদের পাঁচিলে বসে পা দোলাচ্ছেন!

ওই রোগী মানসিক ভাবে ভারসাম্যহীন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন পাঁচেক আগে তাঁকে করোনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তারপর থেকেই তিনি কার্যত দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি নিজের মর্জিমতোই চলাফেরা করেন। কারও কোনও ক্ষতি না করলেও, নিজের বেডে তাঁকে আটকে রাখা যাচ্ছে না কিছুতেই।

স্বাভাবিক ভাবেই তাঁকে সামলাতে গিয়ে কার্যত কালঘাম ছুটে গেছে চিকিৎসক, নার্স, অচিকিৎসক কর্মী থেকে পুলিশকর্মী—সকলের।

তবে রবিবারের ঘটনা ছিল আরও ভয়ের। সকাল থেকে দিনভর খোঁজ নেই তাঁর। পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, ছাদে চলে গিয়েছিলেন ওই রোগী। দেখা যায়, ৯ তলার ছাদের কার্নিশে বসে পা দোলাচ্ছেন তিনি! কোনও রকমে বুঝিয়েসুঝিয়ে তাঁকে নামানো হয়। আবার ঘুরতে শুরু করেন ওয়ার্ড-ময়। আবার বারণ করা হলে, দোতলা থেকে নাকি নীচে ঝাঁপ দিয়ে দেন তিনি! গায়ে জড়ানো প্রচুর লেপকম্বল, সবসুদ্ধ পরেন নীচের ব়্যাম্পে। কোনও রকমে ফের বেডে ফেরানো হয় তাঁকে। চোট লাগেনি তেমন, সেটাই সৌভাগ্য সকলের।

হাসপাতাল সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, “করোনা পজিটিভ হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এই রোগীকে। চিকিৎসার জন্য সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লকের করোনা ওয়ার্ডে তাঁকে রাখা হয়েছে। কিন্তু মাঝেমধ্যে লেপ-কম্বল নিয়ে ছোটাছুটি করছে বলে শুনতে পারছি। মানসিক সমস্যা রয়েছে একটু। আমরা চেষ্টা করছি সবরকম ভাবে তাঁর চিকিৎসা করে দ্রুত সুস্থ করে তোলার।”

কিন্তু যতদিন না সুস্থ হচ্ছেন, ততদিন কীভাবে কী হবে তাই নিয়েই মহা চিন্তায় গোটা হাসপাতাল। মাঝেমাঝেই দেখা যাচ্ছে চিকিৎসক বা নিরাপত্তারক্ষা বা পুলিশকর্মীরা পিপিই পরে ওই রোগীর পেছন পেছন ঘুরছেন। তাঁকে অনুনয় বিনয় করছেন বেডে ফেরত যাওয়ার জন্য নানা রকম ভাবে বোঝাচ্ছেন, কেন তাঁর বাইরে ঘোরা উচিত নয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। তাঁকে সামাল দেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছে বলেই জানাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।

তার উপর আজকে ছাদে উঠে যাওয়ার ঘটনায় খানিকটা ভয় পেয়ে গিয়েছেন সকলেই। কারণ সংক্রমণের ভয় একরকম, কিন্তু রোগী যদি নিজে এভাবে ঘোরাঘুরি করতে গিয়ে কোনও বিপদ ঘটান, তবে তা এক জঘন্য পরিস্থিতি তৈরি করবে। তবে এতকিছুর পরেও হাল ছাড়েননি কেউ। রোগীকে সুস্থ করে ফেরানোর জন্য লড়ে যাচ্ছেন সকলেই।

0 Response to "মেডিকেল কলেজে হইহই কাণ্ড! করোনা রোগী ন’তলার পাঁচিলে বসে পা দোলাচ্ছেন! | বঙ্গ প্রতিদিন"

Post a Comment

Article Top Ads

Central Ads Article 1

Middle Ads Article 2

Article Bottom Ads