-->
রেডিও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, অরবিটারই কি পারে হারিয়ে যাওয়া বিক্রমকে খুঁজে আনতে?

রেডিও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, অরবিটারই কি পারে হারিয়ে যাওয়া বিক্রমকে খুঁজে আনতে?

 



বঙ্গ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:-চাঁদের আঁধার দিক কি আড়ালেই থেকে গেল? সত্যি সত্যিই কি হারিয়ে গেল ল্যাল্ডার ‘বিক্রম?’

চাঁদের মাটি ছুঁতে পারেনি চন্দ্রযান ১। চাঁদ মুলুকে পৌঁছনোর আগেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। তবে ‘মৃত্যু’র আগে চাঁদে জলের অস্তিত্বের ইঙ্গিত দিয়ে গিয়েছিল। প্রথম চন্দ্রাভিযানের সেই ব্যর্থতা ধুয়ে মুছে সাফ করে দিতেই এই ভারতের এই দ্বিতীয় চন্দ্রযাত্রা। আরও উন্নত প্রযুক্তি এবং অনেক বেশি অর্থব্যয় তৈরি চন্দ্রযান ২ তার লক্ষ্য পূরণ করবেই, এমনই আশা রেখেছিলেন ইসরোর মহাকাশবিজ্ঞানীরা। এমনকি ইসরো থেকেও এও জানানো হয়েছিল পরিকল্পনামাফিক সব কিছুই সঠিক পথে চলছে। তাহলে কেন এমন হলো? যদিও ইসরো সরাসরি তার কারণ ব্যাখ্যা করেনি, তবুও সম্ভাব্য কয়েকটি কারণ দেখিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

প্রথমত, হতে পারে গতি। রাত দেড়টা থেকেই চন্দ্রযানের গতি নিয়ন্ত্রণ শুরু করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। ধীরে ধীরে গতি কমিয়ে চাঁদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ল্যান্ডার বিক্রম। ঠিক ২.১ কিলোমিটার দূরত্বে আচমকাই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ইসরো জানিয়েছিল, চাঁদের নামার ঠিক আগে প্রতি সেকেন্ডে বিক্রমের গতি হবে ২ মিটার। তাহলে কী সেই নির্ধারিত মাপের সেই গতি থেকে বিচ্যুত হল বিক্রম? প্রশ্ন একটা থেকেই যায়।

দ্বিতীয়ত, মহাকাশবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন তাপমাত্রার তারতম্য। মহাজাগতিক রশ্মির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে বিক্রমকে আগাগোড়া মুড়ে দেওয়া হয়েছিল সোনার সাজে। চাঁদের মাটিতে নামার আগে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। তাহলে কি তাপমাত্রার ভারসাম্য রাখতে পারল না বিক্রম? কারণ অজানা।

তৃতীয়ত, অনেক বিজ্ঞানীদেরই ধারণা, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর যে জায়গা বেছে নেওয়া হয়েছিল তার থেকে অন্য জায়গায় ল্যান্ড করতেই পারে বিক্রম। এমন ঘটনা আগেও হয়েছে। সে ক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে সঙ্কেত পাওযা যায় না, তবে কিছু সময় পরে সঙ্কেত ফিরে আসে। চাঁদের সুদূর দক্ষিণ মেরুতে নামার কথা ছিল ল্যান্ডারের। লুনার সারফেসে যার ম্যাপিং ছিল  ৭০.৯ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষরেখা ও ২২.৭ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমার মধ্যে। এমনটা হতেই পারে এই নির্দিষ্ট জায়গার বদলে অন্য কোথাও অবতরণ করেছে বিক্রম! যার কারণে অরবিটার তার সঙ্কেত পাচ্ছে না। যদিও এই সম্ভাবনা কম বলেই মত অনেকের।

তারও কিছু কারণ আছে, যেমন ১টা ৫৫ মিনিটে চন্দ্রপৃষ্ঠে নামার কথা ছিল বিক্রমের। শেষ ১৫ মিনিটের ‘টাচ ডাউন’-এর প্রক্রিয়া বেড়ে দাঁড়াল ৩০ মিনিটে। এতটা সময় তাহলে কোথায় ছিল বিক্রম?

চতুর্থত, রেডিও যোগাযোগ একটা বড় কারণ। অনেক বিজ্ঞানীই আশাবাদী, রেডিও যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়নি। তাহলে অরবিটার যখন তার কক্ষে পাক খেতে খেতে ফের চাঁদের দক্ষিণ মেরুর ওই অংশের উপর দিয়ে যাবে, তখন ঠিক ল্যান্ডারকে খুঁজে বার করবে।

এরও দ্বিমত থাকতে পারে, কারণ ল্যান্ডার যদি লুনার সারফেস থেকে ছিটকে মহাকাশে হারিয়ে যায়, তাহলে তাকে আর খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। যদি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে রেডিও যোগাযোগে সমস্যা হয়, তাহলে একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা রয়েছে।

অতএব, গল্পের ইতি এখনই হয়নি। উপসংহারে পৌঁছনো ঠিক হবে না। সময় আরও কিছু আছে।

0 Response to "রেডিও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, অরবিটারই কি পারে হারিয়ে যাওয়া বিক্রমকে খুঁজে আনতে?"

Post a Comment

Article Top Ads

Central Ads Article 1

Middle Ads Article 2

Article Bottom Ads