-->
করোনা মোকাবিলায় দেশের পাঁচ ভ্যাকসিন, ট্রায়ালে রয়েছে তিন, জানাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক | বঙ্গ প্রতিদিন

করোনা মোকাবিলায় দেশের পাঁচ ভ্যাকসিন, ট্রায়ালে রয়েছে তিন, জানাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক | বঙ্গ প্রতিদিন




বঙ্গ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:- দেশের তিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির ভ্যাকসিন ক্লিনিকাল ট্রায়ালের স্তরে রয়েছে। অন্যদিকে, প্রিক্লিনিকাল পর্ব পার হলেও মানুষের শরীরে ট্রায়াল শুরু হয়নি আরও দুই টিকার। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অধীনস্থ ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স জানিয়েছে, পুণের জেনোভা বায়োফার্মাসিউটিক্যাল ও হায়দরাবাদের বায়োলজিক্যাল ই—এই দুই বায়োটেকনোলজি কোম্পানির টিকার সেফটি ট্রায়ালের রিপোর্ট বেশ ভাল। এবার মানুষের শরীরে প্রয়োগের জন্য রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে।
ভারত বায়োটেক ও জাইদাস ক্যাডিলার ভ্যাকসিন ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় পর্বের ট্রায়াল শুরু করে দিয়েছে। অন্যদিকে, ভ্যাকসিনের টিকার ট্রায়ালে এগিয়ে সেরাম ইনস্টিটিউটও। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রজেনেকার ডিএনএ ভেক্টর ভ্যাকসিন ভারতেই তৈরি করছে পুণের সেরাম ইনস্টিটিউট। সংস্থার কর্ণধার আদর পুনাওয়ালা জানিয়েছিলেন এ বছরের সেপ্টেম্বরেই ভ্যাকসিন চলে আসতে পারে বাজারে।
দেশের পাঁচ ভ্যাকসিন

জেনোভা বায়োফার্মাসিউটিক্যাল

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটেলের বায়োটেক ফার্ম এইচডিটি বায়োটেকনোলজি কর্পোরেশনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভ্যাকসিন তৈরি করেছে পুণের জেনোভা বায়োফার্মাসিউটিক্যাল। আরএনএ (রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড) টেকনোলজিতে মেসেঞ্জার আরএনএ (mRNA) সিকুয়েন্সকে কাজে লাগিয়েছে HGCO19 ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট ডিজাইন করেছে জেনোভা। সংস্থার সিইও সঞ্জয় সিং জানিয়েছেন, ল্যাবরেটরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়াল শেষ হয়েছে। পশুদের শরীরে এই টিকার প্রভাব ইতিবাচক। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক ও ড্রাগ কন্ট্রোলের অনুমোদন পেলে আগামী অক্টোবর মাস থেকেই মানব শরীরে এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হবে। স্বেচ্ছাসেবকদের দুটি দলে ভাগ করে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল হবে বলে জানিয়েছে জেনোভা। একটি দলে থাকবে ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সীরা। অন্যদলে ৫৫ থেকে ৭০ বছর বয়সীরা। দুই দলে ভ্যাকসিনের ডোজও আলাদা হবে।

বায়োটেকনোলজি ই

ভ্যাকসিন তৈরিতে জনসন অ্যান্ড জনসনের সঙ্গে চুক্তি করেছে হায়দরাবাদের বায়োটেকনোলজি ফার্ম বায়োটেকনোলজি ই। গত ১৩ অগস্ট বিবৃতি দিয়ে সংস্থার তরফে এ কথা জানানো হয়। ভ্যাকসিনের উৎপাদন ও বিতরণের জন্য জনসনের ফার্মাসি গ্রুপ জ্যানসেন ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ভারতের এই বায়োটেকনোলজি কোম্পানির। বায়োমেডিক্যাল অ্যাডভান্সড রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (BARDA) যৌথ উদ্যোগে Ad26.COV2.S ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট ডিজাইন করেছে জনসন অ্যান্ড জনসনের রিসার্চ উইং জ্যানসেন ফার্মাসিউটিক্যালস। সার্স-কভ-২ ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনকে নিষ্ক্রিয় করে তাকে ল্যাবরেটরিতে বিশেষ পদ্ধতিতে পিউরিফাই করে এই ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই মার্কিন সরকারের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে প্রায় ১০০ কোটি ভ্যাকসিনের ডোজ তৈরির প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসন।

সেরাম ইনস্টিটিউট

অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের প্রথম পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হওয়ার পরেই ভারতে এই টিকা তৈরির লাইসেন্স পায় সেরাম ইনস্টিটিউট। ব্রিটেনের জেন্নার ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ডিএনএ ভেক্টর ভ্যাকসিন ChAdOx1 nCoV-19 ক্যানডিডেট ডিজাইন করেছে অক্সফোর্ডের ভাইরোলজিস্ট সারা গিলবার্টের টিম। কোভিড ভ্যাকসিন গবেষণায় অক্সফোর্ডের হাত ধরেছে ব্রিটিশ-সুইডিশ ফার্ম অ্যাস্ট্রজেনেকা। অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রজেনেকার সঙ্গে চুক্তি করে ডিএনএ ভেক্টর ভ্যাকসিনের ফর্মুলাতেই কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন তৈরি করেছে সেরাম। ড্রাগ কন্ট্রোল ও আইসিএমআরের নির্দেশিকা অনুসারে দুটি ডোজে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল হবে। ০ থেকে ২৯ দিনের ব্যবধানে টিকার দুটি ডোজ দেওয়া হবে স্বেচ্ছাসেবকদের। প্রথম ডোজ দেওয়ার ২৯ দিন পরে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে। এই সময়ের ব্যবধানে পর্যবেক্ষণে থাকবেন স্বেচ্ছাসেবকরা। তাঁদের শরীরে কী কী বদল হচ্ছে তার রেকর্ড রাখা হবে। ১৮ বছরের উপরে সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্কদেরই টিকা দেওয়া হবে।

ভারত বায়োটেক

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) ও পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি (এনআইভি) থেকে সার্স-কভ-২ ভাইরাল স্ট্রেন নিয়ে ল্যাবোরেটরিতে তার স্ক্রিনিং করে ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট BBV152 বানিয়েছে ভারত বায়োটেক। প্রথম স্তরের টিকার ট্রায়াল শেষ করে দ্বিতীয় স্তরে ঢুকেছে হায়দরাবাদের ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ভারত বায়োটেক। জুলাই মাসের মাঝামাঝি থেকে দেশের ১২টি হাসপাতালে ৩৭৫ জনকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। এখনও অবধি টিকা কেমন কাজ করেছে তার প্রাথমিক রেজাল্ট সামনে আনল ভারত বায়োটেক। জানানো হয়েছে, টিকার কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। প্রথমবার টিকার ডোজ দেওয়ার পরে এতদিন পর্যবেক্ষণে ছিলেন স্বেচ্ছাসেবকরা। সম্প্রতি তাঁদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। টিকার ডোজে কোনও ‘অ্যাডভার্স সাইড এফেক্টস’ দেখা যায়নি। টিকার প্রভাবে রক্তে অ্যান্টিবডি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে কিনা জানতে স্বেচ্ছাসেবকদের রক্তের নমুনা টেস্ট করতে পাঠানো হয়েছে।

জাইদাস ক্যাডিলা

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আহমেদাবাদের ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি জাইদাস ক্যাডিলা ঘোষণা করেছিল তারা করোনার টিকা তৈরি করছে। জ়াইকভ-ডি হল প্লাসমিড ডিএনএ ভ্যাকসিন। এই ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট ডিজাইন করেছে সংস্থার ভ্যাকসিন টেকনোলজি সেন্টার (ভিটিসি)। প্লাসমিড ডিএনএ হল ব্যাকটেরিয়ার এক্সট্রাক্রোমোজোমাল ডিএনএ। তাকেই বিশেষ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে করোনার টিকা তৈরির কাজে লাগানো হয়েছে। এই প্লাসমিড ডিএনএ-র সেলফ-রেপ্লিকেশন ক্ষমতা আছে। দেহকোষে ঢুকে বিভাজিত হয়ে ভাইরাল প্রোটিনের অনুরূপ প্রোটিন তৈরি করবে। যার কারণে শরীরে বি-কোষ ও টি-কোষ সক্রিয় হয়ে উঠে শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে প্রথম পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হয়েছিল ১৫ জুলাই। হাজারের বেশি জনকে টিকা দেওয়া হয়েছিল। প্রত্যেকের শরীরেই টিকার প্রভাব ইতিবাচক, এমনটাই জানিয়েছিলেন জাইদাস ক্যাডিলার চেয়ারম্যান পঙ্কজ আর পটেল। সম্প্রতি এই টিকার দ্বিতীয় স্তরের ট্রায়াল চলছে।

0 Response to "করোনা মোকাবিলায় দেশের পাঁচ ভ্যাকসিন, ট্রায়ালে রয়েছে তিন, জানাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক | বঙ্গ প্রতিদিন"

Post a Comment

Article Top Ads

Central Ads Article 1

Middle Ads Article 2

Article Bottom Ads