শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম,প্যাঙ্গং এলাকায় সেনা বাড়াচ্ছে ভারত,কৌশলগত পদক্ষেপে চিনের থেকেও এগিয়ে
Tuesday, September 1, 2020
Comment
বঙ্গ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক :-প্যাঙ্গং হ্রদের দক্ষিণ প্রান্ত দিয়ে ভারতীয় নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে চিনের লাল ফৌজ। ওই এলাকায় ভারতীয় সেনারা টহল দেয়। সেখানে নিজেদের ঘাঁটি তৈরির চেষ্টায় ছিল চিনের বাহিনী। ভারতীয় সেনা জানাচ্ছে, প্যাঙ্গং হ্রদের উত্তর প্রান্তে এতদিন তৎপর ছিল চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। এবার তাদের চোখ পড়েছে দক্ষিণ সীমাতেও। তাই গোটা প্যাঙ্গং এলাকাতেই সেনার সংখ্যা আরও বাড়াচ্ছে ভারত। সেই সঙ্গে নামানো হচ্ছে যু্দ্ধট্যাঙ্ক। শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম নিয়ে তৈরি রয়েছে বায়ুসেনাও। চিন ফের জমি দখলের চেষ্টা চালালে প্রবল শক্তি দিয়ে তা রুখে দেবে ভারতীয় বাহিনী।
ভারতীয় বায়ুসেনার শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দেখে চিনের বায়ুসেনা (পিপলস লিবারেশন আর্মি এয়ার ফোর্স) রুশ প্রযুক্তিতে তৈরি অত্যাধুনিক এস-৩০০ ও এস-৪০০ এয়ার ওয়েপন সিস্টেম মোতায়েন করেছে। তাছাড়াও চিনের কাছে আছে এলওয়াই ৮০ ও আরও কিছু এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। তবে ভারতীয় বায়ুসেনাকে টক্কর দেওয়া অত সহজ নয়। ভারত অনেক আগে থেকেই পূর্ব লাদাখ সীমান্তে আকাশসীমাকে সুরক্ষিত রাখার কৌশলগত পদক্ষেপ নিয়ে রেখেছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় দুই দেশের বাহিনীর মুখোমুখি সংঘাতের আগে থেকেই লাদাখে টি-৯০ ভীষ্ম ট্যাঙ্ক মোতায়েন করা শুরু করেছিল ভারতীয় বাহিনী। সেই সঙ্গে সুখোই, মিরাজ, মিগ-২৯ এর যুদ্ধবিমানও তৈরি রাখা হয়েছে। নামানো হয়েছে অ্যাটাক হেলিকপ্টার ও সশস্ত্র হেরন ড্রোন।
ভারতীয় সেনা জানাচ্ছে, ১৪ হাজার থেকে ১৬ হাজার ফুট উচ্চতায় গালওয়ান উপত্যকায় যুদ্ধাস্ত্র মোতায়েন করা ও রণকৌশলের দিকে থেকে চিনা বাহিনীর থেকে অনেকটাই এগিয়ে ভারতীয় সেনা ও বায়ুসেনা। কারণ চিনা বাহিনীকে বহুদূর থেকে সামরিক সরঞ্জাম বয়ে আনতে হচ্ছে। অথচ পূর্ব লাদাখের কাছেই পঞ্জাব, হরিয়ানা, কাশ্মীর, লেহ-সহ ভারতের একাধিক এয়ারবেস রয়েছে যেথান থেকে সামরিক সরঞ্জাম উড়িয়ে আনা অনেক বেশি সহজ। তবে চিনের হোটান এয়ারবেস থেকে দুটি জি-২০ স্টিলথ এয়ারক্রাফ্টকে প্যাঙ্গং এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। লাদাখ সীমান্তের কাছেও সামরিক পরিকাঠামো তৈরির চেষ্টা করছে লাল ফৌজ।
ভারতীয় সেনা জানাচ্ছে, কৌশলগত পদক্ষেপে চিনের থেকে অনেক বেশি এগিয়ে ভারত। চিনের বাহিনী ঠিক কোন কোন পয়েন্টে ঝামেলা বাঁধাতে পারে তার আগাম আঁচ করেই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আগে থেকেই মজবুত করে রাখা হয়েছে। ভারতের আকাশসীমাকে সবরকমভাবে সুরক্ষিত রাখতে কমব্যাট ফাইটার জেট নামিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। টহল দিচ্ছে সুখোই-৩০, মিরাজ-২০০০ ফাইটার জেট ও মিগ-২৯ ফাইটার জেটের নয়া ভার্সন। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ডাবল ইঞ্জিন মাল্টিরোল এয়ার সুপিরিয়রিটি ফাইটার জেটগুলির অন্যতম হল এই সুখোই। এই ফাইটার জেট থেকে আবার ব্রাহ্মস মিসাইল ছোড়ার প্রযুক্তিও রয়েছে ভারতের। ফ্রান্স থেকে কেনা রাফাল ফাইটার জেট আর কিছুদিনের মধ্যেই চলে আসবে লাদাখ সীমান্তে।
শক্তিশালী অ্যাটাক হেলিকপ্টার অ্যাপাচে এএইচ-৬৪ই, সিএইচ-৪৭ এফ চিনুক মাল্টি-মিশন হেলিকপ্টারও নামিয়েছে বায়ুসেনা। তাছাড়া সীমান্তে টহল দিচ্ছে ইজরায়েলি সশস্ত্র হেরন ড্রোন। ‘আনম্যানড এরিয়াল ভেহিকল’ (ইউএভি) হেরন টিপি (Eitan) ড্রোনের প্রতিটিতেই অস্ত্র ভরার ব্যবস্থা আছে। দূরপাল্লার এই ড্রোন দিয়ে শত্রু ঘাঁটিতে অনায়াসেই টার্গেট করা যাবে। পাশাপাশি, এর বিশেষ ক্যামেরা যে কোনও আবহাওয়ার পরিস্থিতিতে যে কোনও সময় শত্রু ঘাঁটির ছবি তুলে আনতে পারবে।
পূর্ব লাদাখে এয়ার ডিফেন্স মিসাইল সিস্টেমের মোতায়েন করছে ভারত। আপাতত ‘কুইক রিঅ্যাকশন সারফেস টু এয়ার মিসাইল সিস্টেম’ মোতায়েন রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আমেরিকার থেকে কেনা এম-৭৭৭ আলট্রা-লাইট হাউইৎজার মোতায়েন শুরু করে দিয়েছে ভারতীয় বাহিনী। এম-১০৭, এম-৭৯৫, ইআরএফবি ও এম৯৮২—এই চার ধরনের গোলা ভরা যায় এই কামানে। ২৪-৪০ কিলোমিটার রেঞ্জ অবধি ভারী গোলাবর্ষণ করতে পারে হাউইৎজার কামান। মুখোমুখি সংঘাতে চিনকে জোর টক্কর দিতে দৌলতবেগ ওল্ডির কাছে মোতায়েন করা করেছে বিধ্বংসী টি-৯০ ট্যাঙ্ক।
প্রতিরক্ষা সূত্রে খবর, ভারতীয় সেনার শক্তি বাড়াতে ইগলা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম মোতায়েন করা হয়েছে। জওয়ানদের কাঁধে থাকবে এই বিশেষ ধরণের মিসাইল সিস্টেম, যার থেকে শত্রু শিবিরে নিপুণ নিশানায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করা যাবে।
0 Response to " শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম,প্যাঙ্গং এলাকায় সেনা বাড়াচ্ছে ভারত,কৌশলগত পদক্ষেপে চিনের থেকেও এগিয়ে"
Post a Comment