‘ভারতে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিপন্ন’, মার্কিন কমিশনের রিপোর্টের তীব্র সমালোচনা নয়াদিল্লির | বঙ্গ প্রতিদিন
Wednesday, April 29, 2020
Comment
বঙ্গ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:ভারতে সংখ্যালঘুরা বিপন্ন বলে তাদের রিপোর্টে জানাল ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত দ্বিদলীয় মার্কিন কমিশন। শুধু সেখানেই থেমে থাকেনি তারা, ভারতীয় সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন পাশ করানোর প্রসঙ্গে ওই মার্কিন কমিশনের রিপোর্টে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ভূমিকারও সমালোচনা করা হয়েছে।
এই মার্কিন কমিশনের পুরো নাম–ইউনাইটেড স্টেটস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ)। তাদের এই রিপোর্টের তীব্র নিন্দা করেছে নয়াদিল্লি। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, “ভারতের বিরুদ্ধে এদের পক্ষপাত দুষ্ট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্য নতুন নয়। অনেক দিন ধরেই চলছে। তবে এ বার এদের অপব্যাখ্যা নতুন উচ্চতায় পৌঁছে গেছে”।
ওই মার্কিন কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতকে নিয়ে বিশেষ উদ্বেগের কারণ রয়েছে। কারণ, ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের ব্যাপারে যে ধরনের ঘটনা ঘটছে তা দেখেও সরকার কখনও চুপ করে রয়েছে, কিংবা সরকারই সে সব ঘটনায় জড়িয়ে যাচ্ছে।
ভারত সহ চোদ্দটি দেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। বাকি দেশগুলি হল, চিন, মায়ানমার, পাকিস্তান, এরিট্রিয়া, ইরান, নাইজিরিয়া, উত্তর কোরিয়া, সৌদি আরব, সিরিয়া, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং ভিয়েতনাম।
মার্কিন রিপোর্টে স্পষ্টতই বলা হয়েছে যে, ২০১৯ সালের ভোটে পুনরায় জিতে আরও সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠনের পর বিজেপি জাতীয় স্তরে এমন সব নীতি নিচ্ছে, যাতে সংখ্যালঘু বিশেষ করে মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিপন্ন হচ্ছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার হচ্ছে, তাদের হেনস্তা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন হাওড়ার পুর-কমিশনার অপসারিত, টিকিয়াপাড়ার ঘটনার রাতেই সিদ্ধান্ত নবান্নের
রিপোর্টে এর পরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর প্রসঙ্গ টানা হয়েছে। ভিনদেশি অনুপ্রবেশকারী শ্রমিকদের তিনি যে উঁইপোকা বলে মন্তব্য করেছিলেন, তার সমালোচনা করা হয়েছে রিপোর্টে। সেই সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কথাও বলা হয়েছে। যোগী বলেছিলেন, যাঁরা নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করছেন তাঁদের বিরিয়ানি নয় বুলেট খেতে হবে। সেই মন্তব্যের সমালোচনা করা হয়েছে রিপোর্টে। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লিতে তিন দিন ধরে হিংসা চলেছে। মুসলিমদের আক্রমণ করা হয়েছে সেই হিংসায়। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, সেই হামলা বন্ধ করতে শুরুতে পুলিশ সক্রিয় ছিল না। বরং অভিযোগ, কোথাও কোথাও হামলাকারীদের ইন্ধন দিয়েছে পুলিশ।
২০০৪ সালের পর ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রসঙ্গে ভারত সম্পর্কে এমন নেতিবাচক মন্তব্য করল এই মার্কিন কমিটি। তবে অনেকের মতে, এই মার্কিন কমিটির রিপোর্ট নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির উত্তেজনার কারণ নেই। এই সব অভিযোগ সত্যি বা মিথ্যে কিনা তা পরের কথা। কিন্তু মার্কিন রিপোর্টের ভিত্তিতে ঘরোয়া রাজনীতিতে সরকারকে আক্রমণ বোকামো হবে। কারণ, মনে রাখতে হবে ভারত হল একটি মজবুত গণতন্ত্র। সেখানে কেন্দ্রে বা রাজ্যে কোনও শাসক দল ভুল করলে মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক উপায়েই সরিয়ে দিতে পারে। কিন্তু ঘরোয়া ব্যাপারে বাইরের নাক গলানো বরদাস্ত করা হবে না। বস্তুত সরকার নির্বিশেষে এই অবস্থান নিয়ে চলেছে বিদেশমন্ত্রকও। ইন্দিরা গান্ধীর জমানা থেকেই বিদেশনীতিতে সেই ট্র্যাডিশন চলছে।
0 Response to "‘ভারতে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিপন্ন’, মার্কিন কমিশনের রিপোর্টের তীব্র সমালোচনা নয়াদিল্লির | বঙ্গ প্রতিদিন"
Post a Comment