
কাশ্মীরে ইস্টবেঙ্গল, দুর্ভাবনার অন্ত নেই উপত্যকা-ফেরত দিল্লির বাঙালি কোচের
Wednesday, October 23, 2019
Comment
আতঙ্কের উপত্যকাতে গিয়েই চণ্ডীগড়, জম্মু-কাশ্মীর এবং উত্তরাখণ্ডের বিরুদ্ধে জয়ের হ্যাটট্রিক করে দিল্লি।
বঙ্গ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক :-ক্লাবের তরফে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে ফেডারেশন কর্ণপাত করেনি। সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শ্রীনগরেই রিয়েল কাশ্মীরের মোকাবিলা করতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে। খেতাবি লড়াইয়ের ভাগ্য অনেকটাই ঠিক করে দিতে পারে ২৮ তারিখের মহারণ। তার আগে অবশ্য আইজল ম্যাচ। স্প্যানিশ কোচ জানিয়ে দিয়েছেন, কাশ্মীর নয়, তার আগে সোমবার আইজল ম্যাচেই ফোকাস থাকছে তাঁর।
এই বিষয়ে অন্যান্য খবর
মুখে তিনি যতই বলুন, কাশ্মীর নাম শুনেই এখন আতঙ্কের চোরাস্রোত বয়ে যাচ্ছে ক্লাবের অন্দরমহলে। কেমন আছে কাশ্মীর, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ত্রাস, আতঙ্ক, রক্ত আর আর্তনাদকে সঙ্গী করেই সেখানে দিন গুজরান হয়। চলতি মাসেই জম্মু-কাশ্মীরে সন্তোষ ট্রফিতে দল নিয়ে গিয়েছিলেন বাঙালি কোচ সন্দীপ ঢোলে। দিল্লির কোচ সন্দীপবাবুকে প্রায় সপ্তাহখানেক থাকতে হয়েছিল উপত্যকায়।
তাঁর কোচিংয়েই দিল্লি এবার সন্তোষ ট্রফির আঞ্চলিক পর্বের বাধা ডিঙিয়ে মূলপর্বে। বহুদিন পরে। ফোনে কাশ্মীরের কথা শুনেই তাঁর গলার টেনশন ছুঁয়ে যায় এ প্রান্তেও। তিনি বলছিলেন, ‘‘সন্তোষে আমাদের খেলতে হয়েছিলেন জম্মুর কাটরা স্টেডিয়ামে। ১১ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত আমরা ছিলাম। সেই সময়ে কার্ফু চলছিল গোটা এলাকা জুড়ে। দোকানপাট, বাজার সমস্ত বন্ধ ছিল। পুরো উপত্যকাতেই হাই অ্যালার্ট জারি ছিল সম্ভাব্য জঙ্গিহানার জেরে। হোটেলের বাইরে বেরোতে দেওয়া হতো না।’’
দিল্লির দলের সঙ্গে কোচ সন্দীপবাবু। (একদম ডানদিকে)
আতঙ্কের উপত্যকাতে গিয়েই চণ্ডীগড়, জম্মু-কাশ্মীর এবং উত্তরাখণ্ডের বিরুদ্ধে জয়ের হ্যাটট্রিক করে দিল্লি। গ্রুপ পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে মূলপর্বে উঠে দিল্লি। রাজধানী শহরের ফুটবলে সুবাতাস ফিরিয়ে আনার জন্য দিল্লি ফুটবল সংস্থার প্রেসিডেন্ট শাজি প্রভাকরণ নিজে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। দিল্লির ক্রীড়ামন্ত্রী মণীশ শিশোদিয়া নিজের বাসভবনে ফুটবলারদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আলাপচারিতা সেরেছেন। কিন্তু এত কিছু মাঝেও কাশ্মীর-আতঙ্ক কাটেনি সদ্য ফেরা ফুটবলারদের। কাটরা থেকে শ্রীনগরের দূরত্ব সড়কপথে প্রায় ছ’ঘণটার। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, জম্মুতেই জঙ্গি হানার প্রাক মুহূর্তেই যদি এমন দুর্ভাবনার প্রহর গুনতে হয়ে ফুটবলারদের, তাহলে খোদ শ্রীনগরে বর্তমান অবস্থা কেমন, তা বলাই বাহুল্য।
জম্মুতে দিল্লির দলের কোচিং স্টাফের অন্যতম অংশ সন্দীপবাবু। (একদম ডানদিকে)
সদ্য কাশ্মীর থেকে ফেরা বাঙালি কোচের জানালেন, সামরিক বাহিনীর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যেই তাঁদের প্র্যাকটিস করতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে অকপট সন্দীপবাবু আরও বলছিলেন, ‘‘ফুটবলারদেরও আতঙ্ক গ্রাস করেছিল। তবে সেই ভয় কাটিয়েই আমরা ভাল রেজাল্ট করেছি।’’ সন্দীপবাবু দিল্লিবাসী হলেও কলকাতার দুই প্রধানের খেলা নিয়মিত ফলো করেন। তিনিও ইস্টবেঙ্গলের আসন্ন কাশ্মীর-যাত্রা নিয়ে চিন্তিত।
যাই হোক, ইস্টবেঙ্গল কর্মকর্তারা অবশ্য তাকিয়ে আদালতের দিকে। কাশ্মীরে বিমানের টিকিট, হোটেল— প্রায় সমস্ত কিছুই বুকিং করা হয়ে গিয়েছে। তবু, মাঠের বাইরে মিনার্ভা বনাম কাশ্মীর ম্যাচের রেজাল্টে নজর থাকছে কোয়েস কর্তাদের। কাশ্মীরে খেলতে না যাওয়ায় মিনার্ভার তিন পয়েন্ট কাটা যাবে কিনা, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে হাইকোর্ট। সেখানে যদি তিন পয়েন্ট কাটার পরিবর্তে মিনার্ভার ম্যাচ রিপ্লে দেওয়া হয়, তাহলে ইস্টবেঙ্গলও ভবিষ্যৎ কর্মসূচি বদলে ফেলতে পারে, এমনটাই ইঙ্গিত ক্লাবের সূত্রে।
0 Response to "কাশ্মীরে ইস্টবেঙ্গল, দুর্ভাবনার অন্ত নেই উপত্যকা-ফেরত দিল্লির বাঙালি কোচের"
Post a Comment